সাজ্জাত হোছন মুন্না, ফাইন্যান্স বিভাগের ৫৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী (সেশন ২০১৯-২০), বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের একজন সুপরিচিত ছাত্রনেতা। ৩.৬০ সিজিপিএ নিয়ে একাডেমিক উৎকর্ষের পাশাপাশি তিনি নিজেকে গড়ে তুলেছেন নেতৃত্ব, সেবা ও দায়িত্ববোধের এক অনন্য প্রতীক হিসেবে। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ক্যাম্পাসে পদার্পণের পর থেকেই তিনি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে নানা কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন। শাহজালাল হলের পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে তাঁর অবদান অনন্য। তাঁর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শাহজালাল হল দাওয়া সার্কেল, শাহজালাল হল কর্জে হাসনা ফান্ড, শাহজালাল হল ল্যান্ডিং লাইব্রেরি এবং শাহজালাল হল ডিবেটিং ক্লাব।
তিনি হলজুড়ে আয়োজন করেছেন একাধিক সফল কর্মসূচি, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান, কোরআন শিক্ষা কোর্স চালু, স্টাফদের জন্য ইফতার আয়োজন, ৬০০+ শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে বৃহৎ ইফতার মাহফিল, এবং হল সংস্কারের আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে লাইব্রেরিতে IELTS ও BCS বই সংযোজন এবং সাইকেল মেরামতের সামগ্রী প্রদান তাঁর উদ্যোগের অংশ। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিতে তিনি সাহসী ভূমিকা রেখে ডিন স্যার বরাবর ১১ দফা এবং প্রো-ভিসি বরাবর ৯ দফা স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। ‘হেল্পিং হ্যান্ড’ নামে একটি সামাজিক প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি করোনা মহামারির সময়ে ও পরবর্তীতে ক্যাম্পাস ও শহরে ইফতার বিতরণ এবং ফেনি বন্যায় ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের মতো কাজ সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া ইসলামি সমাজ কল্যাণ পরিষদে অর্থ সম্পাদক, স্বপ্নযাত্রার সদস্য এবং অগ্রগামী উখিয়া সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
একজন কর্মঠ ও উদ্যমী তরুণ হিসেবে তিনি খেলাধুলা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমেও সক্রিয়। ডিপার্টমেন্ট ফুটবল টিমের সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণের পাশাপাশি ১০ কিলোমিটার ম্যারাথনে সফলভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। FBDA-এর সদস্য ও Voice of Finance প্রতিযোগিতার সেমি-ফাইনালিস্ট হিসেবে একাডেমিক প্রতিযোগিতায়ও রেখেছেন ছাপ।
সাজ্জাত হোছন মুন্না ইফসা (IFSA) কর্তৃক আয়োজিত তিনদিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে সামাজিক অ্যাকশন প্রজেক্ট, যুব নেতৃত্ব ও টেকসই পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছেন। তিনি আরও যুক্ত ছিলেন বিচ ক্লিনিং প্রোগ্রাম, স্থানীয় এলাকায় মসজিদ ও রাস্তা নির্মাণে সহায়তা, দীর্ঘমেয়াদি ইফতার প্রোগ্রামে কার্যকরী সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণ, এবং ‘মিনার’ ও ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান প্রোগ্রাম’-এর স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে।
সেবা, নেতৃত্ব ও সম্প্রীতির দর্শনে বিশ্বাসী সাজ্জাত হোছন মুন্না মনে করেন, “নেতৃত্ব মানে শুধু দাবি নয়, দায়িত্বও; নেতৃত্ব মানে সেবা, ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান, আর সহপাঠীদের প্রতি দায়বদ্ধতা।” আসন্ন চাকসু নির্বাচনে তিনি ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট থেকে এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর লক্ষ্য একটি নৈতিক, সহযোগিতামূলক ও সেবামূলক ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা—যেখানে শিক্ষার্থীদের অধিকার সুরক্ষিত হবে, ক্যাম্পাসে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সংস্কৃতি ফিরে আসবে, এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থী গর্বের সঙ্গে বলতে পারবে, “এই বিশ্ববিদ্যালয় আমার।”